একটা সময় গিয়ে দেখা যায়, এ মিথ্যা ও কাল্পনিক গল্পগুলো শিশুদের মনে এমনই প্রভাব ফেলে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে পৃথিবীর সব ধ্বংস ও অন্যায়কে রুখতে পারে শুধুই সুপারহিরো, রূপকথার নায়ক আর হিন্দুদের দেব-দেবীরা। এসব চরিত্র ও গল্প আমাদের সন্তানদের মনে অবচেতনভাবে তৈরি করে বিশ্বাসের সংকট।
ফলে, একটু বড় হলে যখন আমরা আমাদের সন্তানদের ইসলাম ও ইবাদত পালনের কথা বলি, সেগুলো তাদের মনে কোনো রেখাপাত করে না। নবী, সাহাবি, আউলিয়া, আলেম আর পীর-মাশায়েখের জীবন ও জীবনের গল্প যখন তাদের শোনাই, সেগুলো তাদের কাছে পানসে লাগে। একদমই মনে দাগ কাটতে চায় না। বিশ্বাসের সংকট তাদের মনের মধ্যে ধর্মপালনে অনীহা সৃষ্টি করে। ইসলামি অনুশাসনের পবিত্র পিঞ্জরে আগলে রাখা সম্ভব হয় না তাদের মন ও মনন।
এজন্য শিশু বয়সেই সন্তানদের মন-মস্তিষ্কে স্থান দিতে হয় নবী-রাসুল, সাহাবি-তাবেয়ি আর ইসলামি আদর্শের চেতনা জাগানিয়া গল্প। কেননা, শিশু-কিশোরদের মনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে নানা স্বাদের গল্প। হরেক রকম গল্প। গল্পের বুনন তাদের মনের মধ্যে বুনে দেয় বিশ্বাসের চারাগাছ। তাই তাদের শোনাতে হয়, দেখাতে হয়, পড়াতে হয় সত্য গল্প। যে গল্প তাদের জীবনকে উজ্জীবিত করবে ইসলামের পথে, যে গল্প আলোকিত করবে ইহকাল এবং পারলৌকিক জীবন।
আমাদের সত্যিকারের সুপার হিরো তো এইসব মানুষরাই। নবীরা, সাহাবিরা, অলি-আউলিয়া, পীর-আলেম এরাই তো আমাদের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার হিরো। তাদের জীবনের অসংখ্য ঘটনা, গল্প, উপদেশ বদলে দিতে পারে আমাদের জীবনের মোড়। তাদের ত্যাগ আর চমকে দেওয়ার মতো জীবন আমাদের সন্তানদের সামনে খুলে দিতে পারে শিক্ষা গ্রহণের নতুন এক দুয়ার। যে অনন্ত দুয়ারকে আমরা অবহেলা ভরে দূরে সরিয়ে রেখেছি।
সাহাবিদের জীবনের এমন গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে ‘ছোটদের সাহাবি সিরিজ’টি। নন্দিত লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর মুসলিম শিশুদের জন্য রচনা করেছেন পাঁচ খন্ডের এ সাহাবি সিরিজ। এর আগে উম্মুল মুমিনিনদের জীবন নিয়ে রচিত তার ‘প্রিয়তমা’ বইটি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নতুন বইগুলো শিশুতোষ ঢঙে লেখা, চাররঙা মনকাড়া চিত্রাঙ্কন এবং ঝকঝকে কাগজে ছাপা। এ বইগুলো শিশু-কিশোরদের পরিচয় করিয়ে দেবে আমাদের শিকড়ের সঙ্গে। আধুনিকতা আর পাশ্চাত্যের মোহে যে শিকড়ের কথা আমরা ভুলতে বসেছি প্রায়।