সম্পাদক – ইমরান রাইহান
পৃষ্ঠা সংখ্যা – ৫৬৮
বাইন্ডিং – হার্ডকভার
যুদ্ধ। বিশ্ব ভূখণ্ডের এক অনিবার্য বাস্তবতার নাম। যে ভিতে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর সভ্যতা, শৃঙ্খলা ও তাবৎ ব্যবস্থাপনা। মানুষ যতই শান্তিকামী আর সহনশীলই হোক না কেন—এক সময় তাকে যুদ্ধের পতাকা হস্তে ধারণ করতেই হবে; এতে তার সামান্য আগ্রহ থাকুক, বা না-থাকুক। যদি প্রতিপক্ষ শত্রু তার ও তার দীনের সম্মান বিনষ্ট করে, তার বিশ্বাসের অনিষ্ট সাধনে সচেষ্ট হয় বা তার মর্যাদা হরণের অপচেষ্টায় রত হয়—তাহলে হাত গুটিয়ে বসে থাকা বা প্রতিপক্ষের এমন অযাচিত কর্মকাণ্ড এড়িয়ে চলা, কোনভাবেই কারো জন্য উত্তম ও উন্নত চরিত্রের নিদর্শন হতে পারে না।
পৃথিবীর আবহমানকালের ইতিহাসের ভেতর শির উঁচু করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে মুসলমানদের গৌরবের অতীত; গর্বময় ঐতিহ্য। আমরা মুসলমানদের যুদ্ধের ইতিহাসে আলো ফেললে দেখতে পাই, রণক্ষেত্রে তাদের ইস্পাতকঠিন চিন্তা, নিপুণ কৌশল, সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, নব্য আবিস্কৃত অস্ত্র ও যুদ্ধসরঞ্জাম কতোটা সর্বজনবিদিত। মুসলিম অমুসলিম নির্বিশেষে, সকলের জন্য ইসলামের সুমহান অতীত ইতিহাস জানা প্রয়োজন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যুগের পালাবদলে বর্তমান মুসলমানরা ধর্মীয় অন্যান্য অনুষঙ্গের পাশাপাশি ইতিহাসের প্রতি ঔদাসীন্য দেখিয়েছে অনেক বেশি। যে উদাসীনতার সময়কাল নির্ধারণ করতে ‘কয়েক বছর’ বলেও ক্ষ্যান্ত দেয়া যায় না, বরং বলতে হয়—’কয়েক শতাব্দি’। হ্যাঁ, বিগত কয়েক শতাব্দিকাল ধরেই ইসলামি ইতিহাসের প্রতি আমাদের সীমাহীন অমনোযোগ পরিলক্ষিত হয়েছে।
অনিবার্য ফলাফল হিসেবে, আমাদের ঐতিহ্যের অলি-গলিতে ঢুকে গেছে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের বহু ‘ইতিহাস-চোর’। ইসলামের শাশ্বত সুন্দর ইতিহাসকে তারা খেলার বস্তু বানিয়ে ছেড়েছে। নিজেদের মনমতো মুসলমানদের চিরন্তন অতীতের বাস্তবতা বদলে চিরসুন্দর গোলপগুলোকে পাল্টে দিয়েছে কষ্টদায়ক কাঁটায়।
‘ইসলামের ইতিহাসে যুদ্ধ : নববী যুগ থেকে বর্তমান’ গ্রন্থটি, উম্মাহর এই প্রয়োজনীয়তা পূরণে একজন দুর্বল তবে সচেতন মুমিন পুরুষের প্রজন্মরক্ষার দরদী প্রয়াস। গ্রন্থটি মূল্যবান এ-জন্য যে, এটি ইসলামি ইতিহাসের অনন্য জ্বলজ্বলে কর্মময় অধ্যায়গুলোর মলাটবদ্ধ অনিন্দ্য সমন্বিত রূপ।