ইসলামোফোবিয়া

Product Short Description: 

ইসলামোফোবিয়া ইন দ্য ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড' বইটি মূলত একটি গবেষণামূল বই। যেখানে উঠে এসেছে পাশ্চাত্যের ইসলাম বিদ্বেষের নগ্ন স্বরূপ। যদিও ইসলামোফোবিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে উচ্চারিত একটি শব্দ, তবে এর অস্তিত্বের শেকড় রচিত হয়েছে ইসলামের শুরু থেকেই। বলা হয় পশ্চিমা সমাজবিজ্ঞানীদের মাধ্যমে এর বীজ রোপিত হয়েছে, যা বর্তমানে রাজনৈতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু। এর মাধ্যমে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা বাণিজ্য প্রায় সবক্ষেত্রেই পাশ্চাত্যে মুসলমানদের দেখা হয় অন্য দৃষ্টিতে। তবে সত্য কথা এই যে, এর অতীত ইতিহাসও বেশ পুরোনো, যাকর ধারাবাহিকতা কখনো থামেনি এবং এর বর্তমান প্রবলভাবে জীবন্ত।

লেখক ও গবেষক অরুণ কুন্দনানি তার ‘দ্য মুসলিমস আর কামিং’ বইটিতে তার তিন বছরের মাঠপর্যায়ের গবেষণার মাধ্যমে আলোকপাত করেছেন—কেন মুসলমানরা পশ্চিমের চোখে অপর ছিল বরাবরই। এর কারণ ধর্ম, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও আচরণের ক্ষেত্রে মুসলমানরা তাদের থেকে ভিন্ন; অপরদিকে উভয়ের মধ্যে হাজার বছর ধরে বয়ে গেছে দ্বন্দ্বের স্রোত! আর ইসলামোফোবিয়ার জন্মই সেই শত্রুতার গর্ভ থেকে। পাশ্চাত্য ও ইসলামের মধ্যে অশান্ত সম্পর্কের দীর্ঘ এক পরিক্রমার ফলে পশ্চিমা মানসিকতায় ইসলামোফোবিয়া একটি স্থির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, যার দাবি হলো পাশ্চাত্যজাত সবকিছুরই প্রতিপক্ষ হলো ইসলাম। বইটিতে ইসলামভীতি তত্ত্বের উৎপত্তির উপ্যাখ্যান, মুসলিমদের উপর পশ্চিমাদের জুুলুম-নির্যাতন, মুসলিমদের স'ন্ত্রা'সী ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, সংঘাত ও উগ্রপন্থার বিপরীতে ইসলামের অবস্থান, ইসলামোফোবিয়া নামক কল্পিত ভীতি দূর করার উপায়– ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর তার'ই ভাষান্তর করে়ছেন আব্দুল করিম নোমানী ভাই।

বইটি দীর্ঘ নয়টি অধ্যায়ে বিভিন্ন নান্দনিক শিরোনাম-উপশিরোনামে সাজানো। নিপুণ আলোচনার মাধ্যমে নাইন-ইলেভেন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে কীভাবে চরমপন্থা প্রতিরোধী রাজনীতির সূত্রপাত, পর্যায়ক্রমে ক্রমোন্নতি, পররাষ্ট্রনীতিতে তার প্রভাব ও সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর তার নেতিবাচক প্রক্রিয়া এখানে আলোচনা করা হয়েছে। বইটি পাঠ করলে উপলব্ধি করতে পারবেন ইসলামের অনুপম বিষয়াবলি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা পশ্চিমের দ্বিমুখী বক্তব্য, নেতিবাচক ও অবজ্ঞাসূচক দৃষ্টিভঙ্গি। এছাড়াও এ সময়ের নানা রাজনৈতিক ও সামরিক মেরুকরণ, নাইন-ইলেভেনউত্তর পাল্টে যাওয়া বিশ্ব পরিস্থিতি ও তথাকথিত মানবতা সম্পর্কে।অথচ এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে ইসলামের শক্তিশালী অবস্থান ও মানবিক মূল্যবোধ—যার ওপর কখনো পশ্চিমা পন্ডিতদের চোখ পড়ে না।

যাদের তথ্যবহুল, গবেষণামূলক বই পড়তে পছন্দ না তারা শুরুতে মজা নাও পেতে পারেন। আর নতুন পাঠকদের জন্য বইটি কিছুটা কঠিন মনে হতে পারে তবে বইয়ের অনুবাদ বেশ সহজবোধ্য। একটু কষ্ট করে মন দিয়ে পড়লে আশা করি বইটি চিন্তাশীলদের মনে ঝড় তুলবে। যারা আমার মতো মোটেও চিন্তাশীল নই, তাদেরও মনেও চিন্তার বীজ বপণ হবে। তবে নতুন পাঠকদের বলবো বইটি ২/৩ বার পাঠ করার জন্য। আশাকরি তখন এর গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।