একুশ বছর কশ বছর পর, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, তিনদিনের জন্য কলকাতা গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় চিত্রশিল্পীদের ওপর কিছু বই কেনা যা আমার অর্ধসমাপ্ত একটি বইয়ের পরবর্তী অধ্যায়ে ব্যবহার করা হবে। দ্বিতীয়ত, আমি আমার ছেলেবেলার প্রথম স্মৃতির শহর রানাঘাটে যেতে চেয়েছি।
তিনদিনের মধ্যে দু'দিন কেটেছে কলকাতায় এবং একদিন রানাঘাটে যেতে আসতে। কলকাতায় যেসব স্থানে গিয়েছি, যা দেখেছি, শুনেছি এবং একদিনের রানাঘাট সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে এই বই। এটি ভ্রমণকাহিনি বলা সঠিক হবে না, বলা যায় ভ্রমণপ্রবন্ধ। লব্ধ অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অধীত বইপত্র থেকে আহৃত তথ্য। এটি ভ্রমণকাহিনিও বটে, কেননা এখানে গল্পও বলা হয়েছে মানুষ, স্থান এবং জন্তু (ঘােড়া) সম্বন্ধে। আর গল্প বলতে যা হয়ে থাকে, কিছুটা কল্পনাও রয়েছে। তবে কল্পনা বাস্তবতা বর্জিত নয়, তার উৎস উল্লেখিত ঘটনা বা বিষয়ের ভেতর।
তিরাশি বছর বয়সে একা একা কলকাতা-রানাঘাট যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই আমার একজন সফর সঙ্গী ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের এডভােকেট আলী নুর সাহেবকে বলা যায় প্রায় সর্বজ্ঞ, তার আধুনিকমনস্কতা শ্রদ্ধা জাগাবার মতাে। সম্পর্কে তিনি আমার প্রয়াত বন্ধু আনােয়ারুল ইসলাম অনুর মামা এবং সেই সুবাদে তাকে আমিও মামা ডেকে এসেছি। তার উৎসাহ ও সাহচর্য ছাড়া আমার এই ভ্রমণ ও বই লেখা সম্ভব হতাে না।
গৌরী মিত্রের সঙ্গে পরিচয় হওয়া, তার কন্যা ডিনকুর অদ্বিতীয় আতিথেয়তা এবং তার পুত্র রওনকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপ কলকাতায় আমার স্বল্প মেয়াদি অবস্থানকে উপভােগ্য ও অর্থময় করে তুলেছিল। চালক নরেশ ছিল সর্বদাই তৎপর এবং কর্তব্যপরায়ণ। জয় গােস্বামীর সঙ্গে সল্ট লেক সিটিতে দেখা স্মরণীয় একাধিক কারণেই।
পৈতৃকসূত্রে বাংলাদেশের ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলায় কসবা থানার অন্তর্ভুক্ত গ্রাম সৈয়দাবাদ আমার জন্মভূমি । জন্মসূত্রে কলকাতা আমার জন্মস্থান। ১৯৪৬-এর পর থেকে কলকাতার সঙ্গে আমার সম্পর্ক মিশ্র অনুভূতির। ইংরেজিতে যাকে বলে লাভ এন্ড হেটের। রানাঘাট চিরকালের নস্টালজিক স্বপ্নপুরী। এই দুই স্থানের জন্য আমার অসীম ভালােবাসা ও শুভেচ্ছা।
হাসনাত আবদুল হাই
নভেম্বর, ২০১৯
Title | : | কলকাতা রানাঘাট |
Author | : | হাসনাত আব্দুল হাই |
Publisher | : | অন্যপ্রকাশ |
ISBN | : | 9789845026086 |
Edition | : | 2020 |
Number of Pages | : | 224 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |