Product Short Description:
বই |
|
ধরন |
|
লেখক |
|
অনুবাদক |
|
প্রকাশনা |
|
পৃষ্ঠা |
|
কভার |
|
ISBN |
|
প্রকাশকাল |
|
পিডিএফ |
একটু পড়ুন (PDF) |
ইউরোপে ধর্মযুদ্ধের প্রেক্ষিতে সহনশীলতার উদ্ভব হয়েছিল, যা পরবর্তীতে একটি সুদৃঢ় মূলনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। ইউরোপকে দীর্ঘ সময় ধর্মীয় নিপীড়ন ও গির্জার বাড়াবাড়ির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যার অন্যতম প্রতীক হচ্ছে ইনকুইজিশন। পাদ্রী নবম গ্রোগরি, ১১২৩ সালে ফ্রান্সের রাজা নবম লুইয়ের শাসনামলে ইনকুইজিশনের প্রচলন ঘটায়। এরপর ১২৫২ সালে চতুর্থ ইনোসেন্ট পাপাল আদেশবলে একে পাকাপোক্ত করেন এবং ধর্মীয় নিপীড়নকে ধর্মের অংশে পরিণত করেন। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা প্রকাশের সবচেয়ে খারাপ ঘটনাটি ছিল ২৪ আগস্ট ১৫৭২ সালের সেন্ট বার্থলোমিউর গণহত্যা, যেখানে হাজার হাজার ফরাসি হুগোনেটকে (প্রোটেস্ট্যান্ট) সমূলে বিনাশ করে দেওয়া হয়।
ধর্মীয় নিপীড়নের রাজনীতি সপ্তদশ শতকের ইউরোপের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডলে গুরুতর প্রভাব ফেলে, যা ‘থার্টি ইয়ার ওয়ার’ এবং ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে উৎকটভাবে প্রকাশিত হয়েছিল।
ধর্মীয় বাড়াবাড়ি ইউরোপে চিন্তার দুটি ধারা তৈরি করে, প্রথম ধারার সারকথা হচ্ছে, যেহেতু বিভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী খ্রিষ্টানদেরকে সামগ্রিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করা সম্ভব না, তাই একটি সমন্বিত গির্জার অধীনে ন্যূনতম মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐক্যবদ্ধ করা, বাদবাকি ছোটখাট বিষয় এবং উপাসনার পদ্ধতিতে পার্থক্য থাকবে। দ্বিতীয় ধারা সার্বজনীন গির্জার ধারণাকে অস্বীকার করে এবং খ্রিষ্টানদের সকল মতাদর্শের প্রতি সহনশীলতার আহ্বান জানায়। সপ্তদশ শতকের শেষদিকে এসে এই পক্ষের পাল্লা ভারি হয়ে যায়।
উরোপে সহনশীলতার উদ্ভব হয়েছে তথাকার ধর্মযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে, যেখানে প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ফলে হাজার হাজার খ্রিষ্টান নিহত হয়েছে। তাই ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্নকরণ অর্থে সহনশীলতা বা সহজ কথায় সেক্যুলারিজম ছিল খ্রিষ্টবাদ থেকে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান।
সুতরাং লিবারেল সহনশীলতা একটি পশ্চিমা পণ্য যা পশ্চিমা সভ্যতা, বোধ ও পরিস্থিতির নির্দেশক। ফারাজ বু উশার ভাষায় ষোড়শ শতক থেকে সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইউরোপজুড়ে চলমান ধর্মীয় গোঁড়ামি ও রক্তক্ষয়ী সংঘাত রোধে টলারেন্স ছিল তাৎক্ষণিক জরুরি প্রয়োজন।