খাদিজা কেন প্রৌঢ়ত্বের দ্বারপ্রান্তে এসে হাত বাড়িয়ে আগলে নিলেন যুবক মুহাম্মদের হাত? মুহাম্মদ (সা.) যেদিন নবী হলেন, ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি; খাদিজা কেন তাঁকে বুকে জড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আপনার কোনো ভয় নেই?’
নবীজি এবং তাঁর ১১ জন স্ত্রীর দাম্পত্যজীবনের অসংখ্য গল্পভাষ্য নিয়ে রচিত ইতিহাস-অনুসন্ধানী লেখক সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর-এর উপাখ্যানগ্রন্থ ‘প্রিয়তমা’। একদিকে নিরেট নির্মোহ ইতিহাসের বর্ণিল আয়োজন, আরেকদিকে উম্মুল মুমিনিনদের জীবনের অনালোচিত অধ্যায়ের অভিনব আবিস্কার। অনবদ্য ভাষাশৈলী ও প্রাঞ্জল গদ্যে নবীজির দাম্পত্যজীবনের পূর্ণ ছায়াছবি উঠে এসেছে এ গ্রন্থে।
প্রিয়তমা নবীপত্নীদের জীবনীগ্রন্থ নয়; বরং তাঁদের জীবনের সুরম্য গল্পভাষ্য। জীবনের গল্পগুলো জীবনীর মতো নয়, বাঙময় হয়েছে গল্পের আদলে। জীবনের গল্প বলতে গিয়ে ওঠে এসেছে তাঁদের সঙ্গে নবীজির দাম্পত্য ভালোবাসা, সাংসারিক প্রেম, পারস্পরিক সৌহার্দ্য, জীবনযুদ্ধে লড়ে যাওয়ার সঞ্জিবনী, নারী অধিকার, নারীশিক্ষাসহ আরও অনেক অজানা কাহিনিকাব্য।
আমাদের লৌকিক সমাজের প্রায় প্রতিটি পরিবারে আজকাল শোনা যায় স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ, মানসিক টানাপোড়েন, পরস্পরের বিশ্বাসহীনতা, সংসার ভাঙার করুণ সুর। দাম্পত্য কলহের বিষবাষ্প যেন ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে আমাদের চারপাশের সমাজ। কিন্তু আমরা নিজেদের কি কখনো নবীজি ও তাঁর স্ত্রীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছি? কখনো কি তাঁদের সংসারের আদলে আমাদের সাংসারিক সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার চেষ্টা করেছি? হয়তো কখনো করা হয়নি। অথচ তাঁদের জীবনে রয়েছে প্রেম আর ভালোবাসায় পূর্ণ এক সংসারের ছায়াছবি। তাঁদের দাম্পত্যজীবনের অসংখ্য অনুপম শিক্ষা সমগ্র পৃথিবীর জন্য শিক্ষণীয়। অনাগত সকল সভ্যতার জন্য তাঁদের সাংসারিক প্রেম নক্ষত্রের মতো জাজ¦ল্যমান। যে গ্রহণ করবে, তার জীবন আলোকিত হবে।