লেখক হুমায়ূন আহমেদ আর আমার কনিষ্ঠ পুত্র মাজহারুল ইসলাম 'দখিন হাওয়ায় পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকে। আমি থাকি পুত্রের কাছেই। হুমায়ূনের রত্নগর্ভা জননী আয়েশা ফয়েজও বেশির ভাগ সময় থাকেন পুত্রের সঙ্গে। আয়েশা ফয়েজের সঙ্গে আমার বেশ সখ্য। আমরা নানা বিষয়ে গল্প করি। আমাদের সেই গল্পে মাঝে মাঝে যােগ দেয় হমায়ূন। প্রচুর কৌতূহল তার। আমার কাছে অনেক কিছু জানতে চায়, বিশেষ করে আমার জীবনের নানা ঘটনা। ডায়মন্ড হারবার আর কলকাতায় আমার শৈশব-কৈশরের দিনগুলিতে যেন তার আগ্রহটা একটু বেশি। আমি তাকে সেসব বলি নিজের মতাে করে। হুমায়ূন নিবিষ্ট শ্রোতা, মুগ্ধতা তাঁর চোখে। সে বলে, খুব ইন্টারেস্টিং! আপনি এগুলি লিখে ফেলেন। আমি সাহস পাই না। মনে মনে ভাবি-আমার লেখা কে পড়বে ? হুমায়ূন তাে লেখক, আমার মনের ভাব নিশ্চয়ই বুঝতে পারে। বলে, আপনার ঘরেই তাে প্রকাশক। আমি মাজহারকে বলব সে যেন অবশ্যই আপনার বইটি প্রকাশ করে। দু'-চার শব্দ করে লিখতে শুরু করলাম। লেখা বেশি এগােয় না। হমায়ূন মাঝেমধ্যেই জানতে চায়, আপনার লেখা কতদূর হলাে ? আপাও (আয়েশা ফয়েজ) তাগাদা দিয়ে বলেন, তাড়াতাড়ি লিখে ফেলুন। তারপর তাে অনেক কিছুই ঘটে গেল। হমায়ূন ঠাই নিল স্মৃতিতে। আমার লেখা শেষ হলাে, বই হয়ে তা প্রকাশিত হচ্ছে; হুমায়ূন দেখতে পেল না। প্রথম বই প্রকাশের আনন্দটা তাই ঢাকা পড়ে গেছে কষ্টের গভীরে।
---- নূরজাহান সরকার
Title | : | স্মৃতির জানালা |
Author | : | নূরজাহান সরকার |
Publisher | : | অন্যপ্রকাশ |
ISBN | : | 9789845021944 |
Edition | : | 2014 |
Number of Pages | : | 112 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |