বই সম্পর্কে
‘তুমি কি ম্যাজিশিয়ান?’
‘কেন?’
‘এই যে আমি কিছু না বলতেই আমার কখন কী প্রয়োজন সব বুঝে যাও?’
‘যাই?’ ‘হুম।’
‘ওজন্য ম্যাজিশিয়ান হতে হয় না।’
‘তাহলে?’
‘প্রিয়জন হতে হয়। প্রিয়জন ছাড়া প্রয়োজন আর কে বোঝে?’
রায়হান কথা বলে না। রিমি সত্যি সত্যিই তার প্রিয়জন হয়ে ওঠে। প্রয়োজনও।
পুরুষের কাছে নাকি বিয়ের কিছুদিন বাদেই স্ত্রীর উপস্থিতির চেয়েও অনুপস্থিতিই বেশি উপভোগ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু রায়হানের ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটলো উল্টো। রিমি খানিক বাড়ি না থাকলেই তার অস্থির লাগতে শুরু করে। সারাক্ষণ বিচ্ছিরি এক অস্বস্তি আড়ষ্ট করে রাখে তাকে। এমন নয় যে রিমি বাড়ি থাকলেও তার সঙ্গে সারক্ষণ গল্প হয় তার। কিংবা খুনসুঁটি, রোমান্টিসিজম। এসব কিছুই না। বরং দিনের পর দিন কথাও হয় না।
রায়হান যখন লেখার খুব গভীরে ডুবে যায়, তখন তাতে বুঁদ হয়ে থাকে সে। যেন স্রষ্টা তার সৃষ্টিতে নিমগ্ন। তখন দিনের পর দিন কারও সঙ্গেই কথা বলে না সে। একনাগাড়ে লিখতে থাকে পাতার পর পাতা।
অথচ ওই সময়েও রিমিকে তার দরকার হয়।
ওই যে রিমি পাশের ঘরেই আছে। হাঁটছে, নিচু গলায় কথা বলছে কারও সঙ্গে। তার চুড়ির টুংটাং শব্দ ভেসে আসছে। গায়ের গন্ধ উড়ে বেড়াচ্ছে হাওয়ায়। ওইটুকু খুব লাগে রায়হানের। ও ছাড়া তার চলে না। লোকে যখন বিষাদ কিংবা ক্লান্তি কাটাতে ক্যাফেইন নেয়, কিংবা নিকোটিন। রায়হান বোধকরি তখন শুষে নিতে চায় রিমির গায়ের ঘ্রাণ। আঁচলের সুবাস। উপস্থিতির ওম।