দার্শনিকমাত্রই জগৎ জীবন সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে ভাবেন, মানুষকে কল্যাণপথের দিগদর্শন দিয়ে থাকেন। দার্শনিকদের এই মহান উদ্যোগের ফলেই সুরিক্ষত হয় অতীতের সব অমূল্য কীর্তি, সুগম হয় সভ্যতা-সংস্কৃতির অগ্রগতির পথ। এজন্যই প্রত্যেক কৌতুহলী ব্যক্তির উচিত দর্শনের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হওয়া, শ্রেষ্ঠ দার্শনিকদের চরিতমানস ও জীবনদর্শন থেকে শিক্ষাগ্রহণ করা। একথা বলছি এজন্য যে, অতীতই আমাদের অগ্রগতির ভিত্তি। অতীতের যেসব বিশ্বাস, সংস্কার তথা মর্মান্তিক ঘটনা মানুষের প্রগতির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে এবং অন্যান্য যেসব অর্জন মানুষের অগ্রযাত্রার পক্ষে সহায়ক হয়েছে, সেগুলােকে না জেনে আমরা আমাদের নিজেদেরও সঠিকভাবে জানতে পারব না। যেমন, খ্রিস্টপূর্ব যুগের এক বিশেষ পরিবেশে সূচিত হয় পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাস, আবির্ভাব ঘটে সক্রেটিস প্লেটো এরিস্টটল প্রমুখ কিছু কালজয়ী দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারকের। কিন্তু মধ্যযুগের ধর্মীয় শাসনের এক ভিন্নতর পরিবেশে, সামাজিক কর্তৃত্ব ও ধর্মীয় আধিপত্যের অনভিপ্রেত প্রভাবে স্তব্ধ হয়ে যায় স্বাধীন চিন্তার এই ধারা, মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তিবাদী দর্শনের স্থান বহুলাংশে দখল করে নেয় কুসংস্কার ও বিশ্বাসকেন্দ্রিক ধর্মতত্ত্ব। সময়টা ছিল নিঃসন্দেহে শ্বাসরুদ্ধকর। কিন্তু এ গ্লানিকর অবস্থাও পারেনি চিরস্থায়ী হতে, বদলে যেতে বাধ্য হয় নতুন সময়ের প্রগতিশীল শক্তির অলঙ্ঘনীয় প্রভাবে।
জ্ঞানানুশীলন ও সত্যানুসন্ধানের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তখন এগিয়ে এলেন কিছু অকুতােভয় মনীষী এবং শত বাধাবিপত্তি অগ্রাহ্য করে, এমনকি প্রাণের বিনিময়ে, রুখে দাঁড়ালেন নির্বিচার বিশ্বাস ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। ফলে ক্রমশ পতন হলাে মধ্যযুগীয় স্কলাস্টিকবাদের এবং আবির্ভাব ঘটলাে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও যুক্তিবাদী দর্শনের আধুনিক ধারার। দর্শনের ইতিহাসের এই আঁকাবাঁকা পথের দিকে দৃষ্টি রেখেই রচিত হয়েছে বর্তমান গ্রন্থ এবং আলােচিত হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্টশতক থেকে শুরু করে আধুনিক ইউরােপীর রেনেসাঁ পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত প্রায় আঠারােশ বছরের দর্শন।
Title | : | পাশ্চাত্য দর্শন প্রাচীন ও মধ্যযুগ |
Author | : | ডাঃ আমিনুল ইসলাম |
Publisher | : | মাওলা ব্রাদার্স |
ISBN | : | 9847015602406 |
Edition | : | 2018 |
Number of Pages | : | 300 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |